National Youth Day 2021: সাহসী হও, অন্যায়ের প্রতিবাদ কর; মোক্ষলাভ নয়, তরুণ প্রজন্মকে বিবেকানন্দ দিয়েছিলেন আত্মশক্তিতে উদ্বুদ্ধ হওয়ার বার্তা
আজ সত্যান্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ-র জন্মদিবস তথা সর্বভারতীয় যুব দিবস, স্বামী জী সকলকেই সাহসী হওয়ার, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা ; এবং শুধুমাত্র মোক্ষলাভই নয়, তরুণ প্রজন্মকে দিয়েছিলেন আত্ম সচেতন হওয়ার বার্তা।
বিশ শতকের শুরুতে বাংলার উত্থানে স্বামী বিবেকানন্দ উৎসর্গ করেছিলেন তাঁর সব থেকে কার্যকরী অস্ত্র ভগিনী নিবেদিতাকে। নিবেদিতা তাঁর দ্য মাস্টার অ্যাজ আই স হিম-এ লিখেছেন, স্বামীজি বলেছিলেন, দুর্বলের ওপর কেউ অত্যাচার করছে দেখলে আমাদের উচিত, অত্যাচারীকে সঠিক শিক্ষা দেওয়া।ভারতীয় তরুণ সমাজের মধ্যে এই সাহসিকতার বাণী গ্রথিত করার উদ্দেশে নিজের জীবনটাই উৎসর্গ করে দেন ৩৯ বছরে প্রয়াত সন্ন্যাসী।
উনিশ শতকের বাংলায় স্বামীজি এসে বাঙালিকে বোঝালেন, শরীর মন যদি শক্ত না হয় তবে বীরভোগ্যা স্বাধীনতা অর্জন করা অসম্ভব। যে দেশের সন্ন্যাসীরা বরাবর মানুষকে মোক্ষচিন্তায় উদ্বুদ্ধ করেছেন, সেই দেশেই দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘তোমরা সবল হও- তোমাদের নিকট ইহাই আমার বক্তব্য।আরও বললেন, ‘জীবনের পরম সত্য এই- শক্তিই জীবন, দুর্বলতাই মৃত্যু। শক্তিই সুখ ও আনন্দ, শক্তিই অনন্ত ও অবিনশ্বর জীবন; দুর্বলতাই অবিরাম দুঃখ ও উদ্বেগের কারণ; দুর্বলতাই মৃত্যু’।
তিনি আরও বলেন যে,
‘কেবল খাইয়া পরিয়া মূর্খের মতো জীবন-যাপন অপেক্ষা মৃত্যুও শ্রেয়ঃ; পরাজয়ের জীবন-যাপন অপেক্ষা যুদ্ধক্ষেত্রে মরা শ্রেয়ঃ’।
এমন এক ভাষায় তিনি কথা বললেন, যা জড়তায় নিমজ্জিত ভারত দীর্ঘদিন ভুলে গিয়েছিল। তিনি বললেন, ‘পাপ করে কাপুরুষরা। বীর পাপ করে না, পাপচিন্তা মনে আসতেও দেয় না। সম্পূর্ণ নীতিপরায়ণ ও সাহসী হও— প্রাণের ভয় পর্যন্ত রাখিও না। ধর্মের মতামত লইয়া মাথা বকাইও না। ... সকলকে গিয়ে বল—ওঠ, জাগো, আর ঘুমিও না; সকল অভাব, সকল দুঃখ ঘুচাবার শক্তি তোমাদের নিজের ভিতর রয়েছে, এ কথা বিশ্বাস কর, তাহলেই ঐ শক্তি জেগে উঠবে। সিংহ-গর্জনে আত্মার মহিমা ঘোষণা কর, জীবকে অভয় দিয়ে বল—‘উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত প্রাপ্য বরান্ নিবোধত’—Arise! Awake! and stop not till the goal is reached (ওঠ, জাগো, লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থামিও না)’।তাঁর আহ্বানে নিজেদের প্রাণ বাজি রেখে যাঁরা মৃত্যুরূপা মাতাকে বরণ করে নিয়েছিলেন, তাঁর জন্মদিনেই তাঁদের কয়েকজনের প্রয়াণ দিবস। স্বামীজি তাঁদের মধ্যে যে আগুন জ্বালিয়েছিলেন তার চির প্রণম্য শিখা এভাবেই তার দীপ্তি ছড়িয়ে চলেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।‘ বিশ্বাস, অগ্নিময় সহানুভূতি।... তুচ্ছ জীবন, তুচ্ছ ক্ষুধা, তুচ্ছ শীত। ...অগ্রসর হও। ...পশ্চাতে চাহিও না। কে পড়িল দেখিতে যাইও না। এগিয়ে যাও—সম্মুখে। এইরূপেই আমরা অগ্রগামী হইব—একজন পড়িবে, আর একজন তাহার স্থান অধিকার করিবে’।প্রয়াণের কিছুদিন আগে পূর্ববঙ্গে গিয়েছিলেন স্বামীজি। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন সদ্য তরুণ হেমচন্দ্র ঘোষ, যিনি পরে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের মত বিপ্লবী সংগঠন গড়বেন, যেখান থেকে উঠে আসবেন বিনয় বাদল দীনেশরা, সেই হেমচন্দ্রকে স্বামীজি বলেন, পরাধীন জাতির কোনও ধর্ম নেই। তোদের একমাত্র ধর্ম হচ্ছে মানুষের শক্তি লাভ করে বহিরাগত দের দেশ থেকে বহিস্কার করা।
Comments
Post a Comment